৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, রাত ১০:৪২

অশ্লীল বিজ্ঞাপনে ভরপুর ক্যাবল টিভি

প্রাইমনারায়ণগঞ্জ.কম

প্রাইম প্রতিবেদকঃ

নারায়ণগঞ্জের ডিশ লাইন বা ক্যাবল নেটওয়ার্কে ব্যবহারকারীরা টেলিভিশন দেখেন মূলত বিনোদনধর্মী অনুষ্ঠান, নাটক, সিনেমা, খেলাধূলা ও সবশেষ সংবাদ দেখার জন্য। এর মাঝে বিদেশী নতুন সিনেমা ও নাটক দেখার জন্য একটু বেশীই ঝুঁকেন স্থানীয় ক্যাবল নেটওয়ার্কের টিভি চ্যানেলগুলোতে। এসকল চ্যানেলগুলোতে নতুন বা পুরাতন সিনেমা দেখানোর পাশাপাশি স্পন্সরশীপ নেওয়া অনেক নামসর্বস্ব স্থানীয় হারবাল- ক্লিনিকের দোকানের। তাদের প্রদর্শিত ওই বিজ্ঞাপনগুলো হয় বেশ অশ্লীল ও নিন্মমানের। ফলে বিনোদিত হতে গিয়ে উল্টো বিড়ম্বনায় পরে শিশু, কিশোর ও অপ্রাপ্ত বয়ষ্করা।

অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় ক্যাবল টিভিগুলো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে দিনভর এসব চ্যানেলে বিদেশি টিভি চ্যানেলের পাশাপাশি নামে-বেনামের চ্যানেলের লোগো ব্যাবহার করে বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করছে। সেই সাথে মেদ কমানো স্লিম ফিগার, বিউটি পার্লার, কোচিং সেন্টার, ক্লিনিক, ডাক্তার, হারবাল যৌন চিকিৎসা, দোকানের বিজ্ঞাপন, জমি বিক্রি, স্কুল কলেজের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি, বিদেশ যাত্রা ও ত্বক ফর্সা করাসহ বিভিন্ন কুরুচীপূর্ণ অশ্লীল বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। এধরণের বিজ্ঞাপন দেখে পন্য ক্রয় করে ও চিকিৎসা নিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন অনেকেই।

জানা যায়, এসব অবৈধ বিজ্ঞাপন থেকে ক্যাবল টিভি মালিকরা আয় করলেও ভ্যাট ট্যাক্স বা কোন রকম রাজস্ব সরকারের কোষাগারে জমা দিচ্ছেন না। ক্যাবল নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ গেজেট নীতিমালায় ২০১০ এর ৯৫৪৩,৯ এর (৮)(৯) এর ধারায় সম্প্রচার ও সঞ্চালন ক্ষেত্রে বাধা নিষেধ এ বলা হয়েছে কোন প্রকার অশালিন আক্রমনাত্বক রসিকথা অঙ্গভঙ্গি এবং যৌনক্রিয়া ইঙ্গিতসূচক নাচ বা অঙ্গভঙ্গির দৃশ্যর বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে।

সাইফুল ইসলাম (ছদ্মনাম) এক ব্যবসায়ী এই প্রতিবেদককে জানান , ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্কের বিজ্ঞাপন দেখে ব্যাক্তিগত সমস্যা সমাধানে স্ক্রিনে দেখানো নাম্বারে যোগাযোগ করলে তারা আমাকে ২১৫০ টাকা দিতে বলেন। আমি টাকা পরিশোধ করলে তারা একটি পিতলের তাবিজ কুরিয়ার করে পাঠিয়েছেন। টাকা নিয়ে পন্যও দিয়েছে কিন্তু উপকারের বদৌলতে আমি প্রতারিত হয়েছি। তাদের দেওয়া তাবিজ আমার কোন কাজেই আসেনি।

সচেতন মহলের অনেকেই বলছেন, এসকল ক্যাবল টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান পরিবারের সবাই একসাথে দেখবার রুচি থাকে না। কেননা অনুষ্ঠান প্রচারের মাঝে ১০-২০ মিনিট পর পর এমন সব অশ্লিল কুরুচীপূর্ণ বিজ্ঞাপন চলে আসে যে টিভির রিমোট কোথায় আছে তা খুজতে হয় টিভি বন্ধ করবার জন্য। এ সকল নৈতিক অবক্ষয় বিজ্ঞাপন দেখে শিশু-কিশোরদের মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি হচ্ছে। এসব অশ্লিল বিজ্ঞাপনের ওষুধের কোম্পানি অধিকাংশের নেই কোন সরকারি অনুমোদন। চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে ওষুধ ক্রয় করে অনেকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিকি জানান, অশ্লিল বিজ্ঞাপনের জন্য শিশু, কিশোর ও যুব সমাজ ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। বিজ্ঞাপনের কিন্তু নীতিমালা আছে সেই নীতিমিলা যথাযথ নিরীক্ষা না করে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারেনা। একটি বিজ্ঞাপনের অনেক তথ্য থাকে সে তথ্যগুলো কতটুক যথাযথ, আইনত এবং স্বাস্থ্যের জন্য কতটুক ভাল হবে সেটা বিবেচনা করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি তাদের নজরদারি ও দায়িত্ব পালন করতো তাহলে এমনটা হতে পারতো না এবং দেশের এ ক্ষতি হয়না। এ বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারি করতে হবে। দেশের এই ক্ষতির জন্য বিজ্ঞাপনদাতা, প্রচারক ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায় নিতে হবে।

বাছাইকৃত সংবাদ

No posts found.